কফি এমন একটা পানীয় যা আমরা প্রত্যহ পান করি।প্রতিদিন কফি না হলে দিনটাই শুরু হতে চায় না। কফির বিভিন্ন প্রকার বীজ আছে কিন্তু তারমধ্যে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় হল “ আ্যারাবিয়া” এর স্বাদও অপেক্ষাকৃত উন্নত মানের।এর বীজ খানিকটা লম্বাটে। এর পরেই জনপ্রিয়তার শীর্ষ স্থানে আছে “রবুস্টা”এই বীজ গোলাকার ধরনের হয়।আমরা যে কফি পান করি তা কিন্তু বিভিন্ন আদলে খাওয়া হয়ে থাকে বা পরিবেশিত হয়। বহুল প্রচলিত কিছু কফি হল-
১/ ব্লাক কফি: সাধারণত কফি বীজ গরম পানিতে দিয়ে এটি প্রস্তুত করা হয়। এটি খুব সাধারন একটি কফি।একে “ক্যাফে নয়ের “ও বলা হয় (café noir)
২/ লাটহেঃ ইটালিয়ান কফি ড্রিংক এটি। ক্যাফে-ই-ল্যাটে নাম থেকে এটি লাটহে বা লাত্তে নামে পরিচিত। মুলত এস্প্রেস্সো এবং স্টিমড দুধ দিয়ে তৈরি হয়।গরম বা ঠান্ডা অবস্থায় ওপরে হালকা মিল্ক ফোম দিয়ে পরিবেশন করা হয়।
৩/ক্যাপিচিনোঃ লাটহে এর সাথে পার্থক্য হল এটিতে স্টিমড দুধের সাথে দুধের ফোম অর্থাৎ ফাটানো দুধ বেশী ব্যবহৃত হয়।এছাড়াও বিভিন্ন স্বাদের ক্রিম ব্যবহারের মাধ্যমে ভিন্নতা আনা যায়।
৫/ ফ্ল্যাট হোয়াইটঃ দুধের ফোম ছাড়া কেবলমাত্র এস্প্রেস্সো ও স্টিমড দুধ দিয়ে যে কফি প্রস্তুত করা হয় তাকে ফ্ল্যাট হোয়াইট বলে।
৪/ এসপ্রেস্সোঃএটি চিনি এবং কফি পাউডার এর মিশ্রন যেটা উচ্চ চাপের মাধ্যমে মিশ্রিত হয়ে থাকে।এটি বেশিরভাগ অন্যান্য কফি মিশ্রনের প্রাথমিক মিশ্রনের হিসেবে ব্যবহৃত হয়।ক্যাপিচিনো, লাত্তে বানাতেও প্রথমে এস্প্রেস্সো বানাতে হয়। সাধারন এস্প্রেস্সো’র দ্বিগুণ যেই কফি মিশ্রনে ব্যবহৃত হয় তা “ডোপিও” এবং সাধারন এস্প্রেস্সো কে “সোলো “ নামে অভিহিত করা হয়।
৫/অ্যামেরিকানোঃ এস্প্রেস্সো এবং গরম পানি মিশিয়ে এটি প্রস্তুত হয়ে থাকে।এটি ব্লাক কফির সাথে সাদৃশ্যপূর্ন, পার্থক্য হল ব্লাক কফি এটির মত উচ্চ চাপে তৈরি হয় না।
৬/কারটাডোঃ এটি স্পেনে,পর্তুগাল,ল্যাটিন আমেরিকায় উদ্ভাবিত।সমপরিমাণ এস্প্রেস্সো এবং দুধের মিশ্রন দিয়ে এটি প্রস্তুত হয়।তবে দুধের ঘনত্ব অপেক্ষাকৃত কম হয়ে থাকে।
৭/মোক-হাঃ একে মোক-হা বা মোকা বলা হয়। মুলত এটি এস্প্রেস্সো,চকো পাওডার বা চকোলেট ও স্টিমড দুধ দিয়ে এটি তৈরি হয়। কাপে এক শট এস্প্রেস্সোর সাথে হট চকলেট সিরাপ মিশিয়ে তার ওপর দুধ ও ফোম দিয়ে এটি তৈরী করা হয়। ফোমের ওপর কোকো পাউডার ছড়িয়ে পরিবেশন করা যায়।
৮/মাকিয়াটোঃ এটি ইতালিয়ান কফি। এর অর্থ “চিহ্নিত”। মুলত এস্প্রেস্সো, দুধ এবং “ফোম” ব্যবহৃত হয়।এক শট এস্প্রেস্সোর উপর দুধ ও ফোম দিয়ে পরিবেশন করা হয়। বিভিন্ন স্বাদের হয়ে থাকে- ভ্যানিলা,চকোলেট,ক্যারামেল ইত্যাদি।
৯/ডালগোনা: ডালগোনা কফি কিছুটা ঠান্ডা লাটহের মত। দক্ষিণ কোরিয়ার ডালগোনা ক্যানডি থেকে এই নামের উৎপত্তি। সমপরিমাণ ইনস্ট্যান্ট কফি,চিনি ও পানি ভালোভাবে ফেটিয়ে কফির ফোম তৈরী করা হয় এবং ঠান্ডা দুধের ওপর তিক্ত মিষ্টি কফি দিয়ে এটি পরিবেশিত হয়। এই কফি ” কোয়ারেনটাইন কফি ” হিসেবে জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। এটি ঠান্ডাই পরিবেশিত হয়।
১০/ তুর্কি কফি: এই কফি মুলত ইয়েমেন থেকে উৎপত্তি লাভ করলেও অটোমেন শাসনামলে তুর্কিতে বিস্তার লাভ করে।এটি খেতে এসপ্রেসসোর মতন হলেও এর মত এত কড়া নয়। এর কফি বীজ অপেক্ষাকৃত কম পরিস্রাবন করা হয়। এই কফির পানা প্রস্তুত অর্থাৎ ঘনীভুত করতে বেশী সময় লাগে তাই এর স্বাদবৈচিত্র্য রয়েছে।
১১/ নাইট্রো ব্রিউ : এই কফিতে আলাদা করে নাইট্রোজেন গ্যাস সঞ্চালিত হয় । নাইট্রোজেন গ্যাস সহজে পানিতে দ্রবীভূত হয় না, তাই কফির ধরন কিছুটা ক্রিমি, ফোমি ( foamy), এবং বেশি ঘনীভূত হয়ে থাকে।
লেখক- দুরদানা ঐশী মল্লিক
সম্পাদক- সৃজনী মণ্ডল
1,078 total views, 2 views today
Any opinion ..?